ফ্রিল্যান্স বা ফ্রিল্যান্সিং বাংলায় যাকে আমরা মুক্ত পেশা হিসেবে চিনে থাকি। যদিও সাধারণের দৃষ্টিতে এই পেশার মানে বোঝা অনেক কঠিন। মানুষ সাধারনত পেশা হিসেবে যে কোন কাজ কে বোঝায় আর ছেলেরা কাজের তাগিদে ঘরের বাহিরে যাবে দিন শেষে আবার ঘরেই ফিরে আসবে। আর নারীরা ঘরে বসেই গৃহস্থলী কাজ সম্পাদন করবেন। আর মুক্ত পেশার মানে হলো আপনার মন মতোন কাজ করা যেখানে কোন বাঁধা থাকবে না।
ফ্রিল্যান্স কথাটি শুরুটা কখন হয়েছিলো?
এটা অনেকেরই জানা নেই। ১৭৭৮-১৮৩২ এর দিকে স্যার ওয়াল্টার স্কট এর প্রচলন করেছিলেন ইভানহোতে। সে সময়ে ফ্রিল্যান্স বা ভাড়াটে যোদ্ধার প্রচলন করেছিলেন তিনি। পরবর্তীতে এর প্রচলন ঘটে নানান কাজের মাধ্যমে।
ফ্রিল্যান্স বলতে আমরা কি বুঝি?
ফ্রিল্যান্স বলতে আমরা বুঝি একজন ব্যক্তি তার পছন্দ মতন কাজ করবেন। তার ধরাবাধা তেমন কোন নিয়ম থাকবে না। তিনি তার উপর অর্পিত দ্বায়িত্ব যখন ইচ্ছে করবেন এবং সঠিক সময়ে তা হস্তান্তর করবেন। এখানে তিনি কোন কাজের জন্য চুক্তিবদ্ধ হবেন ঠিকই তবে সেই কাজ টি তিনি চাইলে তার নিজ জায়গা হতেও করতে পারেন। তারমানে হলো এটা একটা মুক্ত পেশার জায়গা আপনি আপনার দক্ষতা অনুযায়ী সকল কাজ সম্পাদন করতে পারেন এবং তা আপনি চাইলে আপনার ঘরে বসেই করতে পারেন।
ফ্রিল্যান্সার কাকে বলে?
যিনি এই কাজগুলো সম্পাদন করেন তাকেই ফ্রিল্যান্সার বলা হয়ে থাকে। মুক্তপেশায় যারা যুক্ত তাদেরকেই ফ্রিল্যান্সার বলা হয়ে থাকে। ধরুন আপনি নির্দিষ্ট কোন কাজ জানেন কিন্তু আপনি কোন অফিসের সেই কাজটূকু করার জন্য চুক্তিবদ্ধ হলেন এবং তা আপনি আপনার ঘরে বসেই করছেন এবং তা নির্দিষ্ট সময়েই আপনি হস্তান্তর করলেন তাহলে আপনি একজন ফ্রিল্যান্সার । একজন ফ্রিল্যান্সার নানান কাজে পারদর্শী হতে পারেন। এবং তিনি নানা মাধ্যমে সেই কাজের অর্ডার নিতে পারেন এবং যথা সময়ে সম্পাদন করেই তার অর্থ উপার্জন করতে পারেন। আপনি চাইলেই সেই কাজ আপনার যখন খুশি তখন করতে পারেন, তবে চুক্তি অনুযায়ী যথাসময়েই তা সমর্পণ করা লাগে।
ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ কি কি?
এখন আপনার এই বিষয়ে আগ্রহ জন্মানোটা স্বাভাবিক। কারণ আপনি যদি আপনার কাজটুকু ঘরে বসেই করতে পারেন, তাহলে বাহিরে গিয়ে করার প্রয়োজনীয়তা কি? আপনার প্রাপ্য সম্মানী তো আপনি ঘরে বসেই পাচ্ছেন। তাহলে নানান ঝক্কি-ঝামেলা মাথায় নিয়ে বাহিরে গিয়ে করার কোন মানে আছে কি? হ্যাঁ আছে, এটা যার যার পছন্দের ব্যাপার, কারণ অফিস এনভায়রন্মেন্ট আর ঘরের পরিবেশ তো আর এক নয়। যাদের এই পরিবেশে খাপ খাইয়ে কাজ করার মন-মানসিকতা আছে তারাই এটি করতে পারেন। কারণ ফ্রিল্যান্সিং পেশা যতোটা সহজ মনে হয়, আসলে তা নয়, এখানে আপনাকে ধৈর্য্যের পরীক্ষা দিতে হবে। কারন আপনি কাজ জানলেই হবে না, আপনাকে প্রথমে কাজ খুজে বের করতে হবে, আর সফল হলেই কাজ আপনাকে খুজে নিবে।
নানান রকমের ফ্রিল্যান্সিং-এর কাজ করা হয়ে থাকে, তবে এর মধ্যে যে কাজগুলো সবচেয়ে বেশি আলোচিত তা হলো
- গ্রাফিক্স ডিজাইন
- ডিজিটাল মার্কেটিং
- ওয়েব ডেভেলপমেন্ট
- ভার্চুয়্যাল এসিস্ট্যান্ট
- প্রশিক্ষক/শিক্ষক
- একাউন্টিং/ফিন্যান্সিয়াল কনসাল্টেন্ট
- এডিটর
- ফ্রিল্যান্স রাইটার
- সোশ্যাল মিডিয়া স্পেশালিষ্ট
এছাড়াও আরও অনেক ধরনের কাজ আছে। এখন আপনি ভেবে দেখুন আপনি এর মাঝে কোন কাজটি পারেন?
যদিও না পারেন তাহলে কোন কাজটি আপনার শেখার ইচ্ছে আছে, তা সিদ্ধান্ত নিন, আপনার সঠিক সিদ্ধান্তই আপনার ভাগ্য বদলে দিতে পারে।
এখানে উল্লেখিত কাজগুলোর বেশি চাহিদা আছে, তাই আপনি যে কাজটি ভালো ভাবে করতে অথবা আপনি করতে চান সেটি শিখে নিন, আর আপনার ভাগ্য পরিবর্তনে আজই নেমে পড়ুন। মনে রাখবেন ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারের দিকে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে ২য়। অবাক হচ্ছেন? না আসলেই তাই বাংলাদেশের অদম্য ছেলে-মেয়েরা এখন পৃথিবীতে এই পেশায় ২য় অবস্থানে আছে, তাই দেরি না করে আজই সিদ্ধান্ত নিন আপনি কি করতে চান।
আমার এই লিখাটুকু ভালো লাগলে কমেন্টস করে জানাবেন, এই বিষয়ে আপনার মতামত জানাতে ভুল করবেন না, আপনি কোন কিছু জানতে চাইলেই কমেন্টস করুন।
ফ্রিল্যান্সিং কি?
ফ্রিল্যান্সিং হলো মুক্তপেশা, আপনি আপনার কাজ আপনার সুবিধামতো সময়ে আপনার নিজের অবস্থান থেকে সম্পন্ন করতে পারেন।
ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আমি কাজ করতে পারবো?
ফ্রিল্যান্সার হতে হলে আপনার ধৈর্য্য থাকতে হবে, আপনার ইচ্ছা শক্তিই আপনার সফলতার মূল চাবিকাঠি। তাই আপনি চাইলেই ফ্রিল্যান্সিং করতে পারেন। এতে কোন বাঁধা নেই। চাই আপনার ইচ্ছা আর বাস্তবায়ন করার ক্ষমতা।
আমি ইংরেজি ভালো জানি না আমি কি পারবো?
যেহেতু আমাদের কাজের অর্ডার করবেন বায়ার, তারা যে ভাষাতেই কথা বলুন না কেনো, ইংরেজি মাধ্যমেই আমাদের ডিল করতে হবে, তাই ইংরেজি জানা আবশ্যক, তবে জানা না থাকলে আপনি শিখে নিবেন।
ফ্রিল্যান্সিং শিখতে শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রয়োজন আছে কি?
যে কোন কাজ করতে হলে আপনাকে অবশ্যই বেসিক জানতে হবে আর তাই আপনার শিক্ষার প্রয়োজন আছে, তবে শিক্ষার পাশাপাশি আপনার কাজের দক্ষতার প্রয়োজন বেশি, কারণ বায়ার আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা দেখে কাজ দিবেন না, দিবেন আপনার কাজের অভিজ্ঞতা দেখে।